ফ্রীল্যান্সিং
নিয়ে মানুষের মাঝে আগ্রহের শেষ নেই। দিন দিন যেন এর চাহিদা বেড়েই চলছে। কিন্তু নতুন অবস্থায় যারা আছেন সঠিক
গাইডলাইন না পেলে হয়ত ফ্রীল্যান্সার হওয়ার স্বপ্ন শুরুতেই ভেঙ্গে যেতে পারে। আর আপনাদের এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে
দেশে চলছে
প্রতারণার রমরমা ব্যাবসা। সঠিক তথ্য জানা না থাকলে আপনিও পা দিতে পারেন এই ফাদে। তাই চলুন ফ্রীল্যান্সিং সম্পর্কে সঠিক
তথ্য জানি এবং এরপর ফ্রীল্যান্সিং করার সিদ্ধান্ত নেই।
ফ্রীল্যান্সিং নাকি আউটসোরসিং? আমাদের অনেকের মাঝে একটা কমন কনফিউশন
হল ফ্রীল্যান্সিং কি আর আউটসোর্সিং কি? দুটাই কি একই? আসলে
আউটসোরসিং হল কোন একটা কোম্পানি যদি তার কাজের কোন একটা অংশ কোম্পানির বাইরের
কাউকে দিয়ে করিয়ে নেয় সেই পদ্ধতির নাম। যেমনঃ একটা স্কুলের নিজস্ব ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হল। এখন স্কুল নিশ্চয় শুধু একটা কাজের
জন্য উচ্চবেতনে একজন ওয়েব ডেভেলাপার নিয়োগ দেবে না। তখন তারা এই কাজটি চুক্তিভিত্তিতে
বাইরের কাউকে দিয়ে করিয়ে নেবে। এই 'বাইরের
কেউ' হচ্ছে ফ্রীল্যান্সার আর প্রসেসটার নাম
আউটসোর্সিং। ফ্রীল্যান্সিং
হচ্ছে একটি স্বাধীন পেশা। এখানে
রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কাজ। ডাটা
এন্ট্রি এর মত সহজ কাজ থেকে শুরু করে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর মত বড় ধরনের কাজ রয়েছে
এখানে। আর
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানে কাজ করতে গেলে আপনাকে কোন টাকা ইনভেস্ট করতে হবে
না। সম্পূর্ণ ফ্রীতেই আপনি আয় করতে পারবেন। শুধু আপনাকে জানতে হবে কাজ। কাজ জানা থাকলে আর ভাল দক্ষতা থাকলে
আপনিও ফ্রীল্যান্সিং করে আয় করতে পারেন। এখানে প্রায় সকল ধরনের কাজ পাওয়া যায়।
ব্লগিং করে আয়ঃ
ব্লগিং করে আয়ের কথা অনেকেই শুনেছেন, কিন্তু হয়ত অনেকেই জানেন না কিভাবে আয়
করা যায়। ব্লগিং
হচ্ছে আপনার মতামত/আইডিয়া/নলেজ শেয়ারের অন্যতম মাধ্যম। একটি ব্লগ খুলে আপনি যদি বেশ ভাল
সংখ্যক ভিজিটর আনতে পারেন তাহলে আপনি ব্লগিং করেও বেশ ভাল অর্থ আয় করতে পারেন। এখানে, ভিজিটর হচ্ছে যারা আপনার ব্লগ পড়বে অর্থাৎ আপনার ব্লগের পাঠক। যখন আপনার ব্লগের পাঠক সংখ্যা বেশ ভাল
হবে তখন আপনি গুগল এ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করবেন। যদি অ্যাকাউন্ট পেয়ে যান তাহলে তাদের
বিজ্ঞাপন আপনার ব্লগে প্রদর্শন করাতে পারবেন এবং যখন আপনার ব্লগের কোন পাঠক এই
বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তখন আপনি টাকা পাবেন। এটাই হচ্ছে অ্যাডসেন্স বা বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের সিস্টেম।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ
অনেক সময় দেখে থাকবেন যে, আপনার ডাক্তার আপনাকে কোন টেস্ট করতে
দিলে বলে দেয় অমুক যায়গা থেকে টেস্ট করাবেন। কিন্তু কেন এমন বলে? কারন অমুক যায়গা থেকে টেস্ট করালে ওই ডাক্তার ওই টেস্ট করাতে যত
টাকা খরচ হয়েছে তার কিছু কমিশন পাবে। এটাই হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। ঠিক একই পদ্ধতিতে আপনি যদি অনলাইন
থেকে কারো পন্য বিক্রি করে দিতে পারেন তাহলে আপনিও সেই পন্য থেকে কিছু টাকা কমিশন
পাবেন। তবে
এক্ষেত্রে আপনাকে একজন দক্ষ মার্কেটার হতে হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আরো
বিস্তারিত অ্যাপটিতে পাবেন।
এছাড়াও আছে ইউটিউব এ ভিডিও
মনিটাইজেশন থেকে আয়, ইমেইল
মার্কেটিং থেকে আয়, সফট্ওয়ার
ও অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স
ডিজাইন, থ্রীডি মডেল ইত্যাদি অসংখ্য পথ।
ফ্রীল্যান্সিং এর সুবিধা
যদি আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকেন অনলাইনে থেকে আয় করবেন তাহলে ফ্রীল্যান্সিং ই হবে সেরা উপায়। কেন? হ্যাঁ, ফ্রীল্যান্সিং হচ্ছে কাজ করার একটি উন্মুক্ত প্লাটফর্ম। এখানে রয়েছে ২০০টিরও বেশি ক্যাটাগরির কাজ। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন।
যদি আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকেন অনলাইনে থেকে আয় করবেন তাহলে ফ্রীল্যান্সিং ই হবে সেরা উপায়। কেন? হ্যাঁ, ফ্রীল্যান্সিং হচ্ছে কাজ করার একটি উন্মুক্ত প্লাটফর্ম। এখানে রয়েছে ২০০টিরও বেশি ক্যাটাগরির কাজ। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন।
ফেসবুক এ অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়া
থেকে শুরু করে অ্যাপ্লিকেশন তৈরি এর মত কাজ পাবেন এখানে। আপনি অনলাইনের যেই অংশেই দক্ষ হোন না
কেন, সকল সেক্টরের কাজই রয়েছে এখানে। তবে এখানকার চেনাজানা কিছু কাজ হচ্ছে-
ডাটা এন্ট্রি,
এসইও-SEO, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, পার্সোনাল হেল্প, গ্রাফিক্স ডিজাইন, গেমস ডেভলপমেন্ট, অ্যান্ড্রয়েড, উইন্ডোজ, আইফোন অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট
ইত্যাদি। এই গুলো
হচ্ছে কাজ করার মোস্ট কমন ক্যাটাগরি।
তবে এই সকল ক্যাটাগরির মধ্যে
সবচেয়ে সহজ হচ্ছে এসইও (SEO) এর কাজ । ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন এমন যে
কেউ মাত্র ১-২ মাস পরিশ্রম করে কাজটি শিখে আয় করতে হ্যাঁ, আপনি যেখানে কাজ করবেন সেখানকার
সিস্টেম জানা অবশ্যই জরুরি। তাহলে চলুন প্রথম থেকে শুরু করা যাক-
কোথায় কাজ পাবেন ও কিভাবে আপনি
টাকা পাবেন
অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে
যেখানে আপনি কাজ করতে পারবেন। এই রকম কিছু সাইট হচ্ছে-
এই সকল সাইট গুলোকে বলা হয়
ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস। এই সকল সাইটে দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলা যায়:
এক, ক্লাইন্ট বা বায়ার এর অ্যাকাউন্ট
দুই, ফ্রীল্যান্সার বা ওয়ার্কার অ্যাকাউন্ট
এক, ক্লাইন্ট বা বায়ার এর অ্যাকাউন্ট
দুই, ফ্রীল্যান্সার বা ওয়ার্কার অ্যাকাউন্ট
বায়ার বা ক্লাইন্ট হচ্ছে ওই সকল
ব্যাক্তি যারা আপনাকে কাজ দিবে। এমন অনেক লোক আছেন যারা তাদের কাজ গুলো কাউকে দিয়ে করিয়ে নিতে চান। তারা এই সকল সাইটে বায়ারের অ্যাকাউন্ট
খোলেন এবং জব পোস্ট করেন। এরপর
আপনি বা আমার মত যারা ওয়ার্কার আছেন তারা ওই সকল জবে বিড করি বা আবেদন করি কাজটি
করে দেয়ারজ জন্য। এই ভাবে
একটি কাজে গড়ে ৩০-৫০ জন বিড করে থাকে। ক্লাইন্ট এই সকল লোকদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেন তার কাজটি
করানোর জন্য। এবং ওই
ওয়ার্কার যখন কাজটি কমপ্লিট করে দেন তখন তাকে পেমেন্ট দিয়ে দেন। এই পেমেন্ট এর ১০% ওই ফ্রীল্যান্স
মার্কেটপ্লেস কেটে রেখে দেয়। অর্থাৎ ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস গুলো হচ্ছে এখানে একটি
থার্ডপার্টি। এরা শুধু
আপনাকে বায়ার এবং বায়ারকে আপনাকে খুজে পেতে সাহায্য করে। বিনিময়ে যখন কোন কাজ করানো হয় তখন
তারা ১০% ফি কেটে নেয়। আশা করি
বুঝতে পেরে গেছেন।
তো এখন আপনার কাজ কি?
অনেক কিছুই তো বলে ফেললাম, এখন বলব ফ্রীল্যান্সিং সাইটে কাজ করতে গেলে আপনাকে কি করতে হবে?
অনেক কিছুই তো বলে ফেললাম, এখন বলব ফ্রীল্যান্সিং সাইটে কাজ করতে গেলে আপনাকে কি করতে হবে?
উপরে উল্লেখিত কাজের বিভিন্ন
ক্যাটাগরি থেকে যে কোন এক বা একাধিক বিষয়ে আপনি কাজ শিখতে পারেন এবং নিজেকে দক্ষ
হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। কাজ
শেখার পর কাজ করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন ফ্রীল্যান্স সাইটগুলোতে অ্যাকাউন্ট খুলতে
হবে। এবং অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনার
প্রোফাইল ১০০ ভাগ পূর্ণ করতে হবে। প্রোফাইল পূর্ণ করার পর আপনি যে কাজ শিখেছেন সেই সকল কাজে বিড করতে
হবে। বিড করার অর্থ হচ্ছে কাজে আবেদন করা। একটা কাজে অনেকেই বিড করে থাকেন এবং
সেখানে থেকে একজন বা একের অধিক জনকে সিলেক্ট করা হয় কাজটি করার জন্য এবং সেই
ব্যক্তি যদি কাজটি সফলভাবে করে দিতে পারেন তাহলে তাকে টাকা পরিশোধ করেন। মোট কথা, আপনাকে কাজ শিখতে হবে, ফীল্যান্সিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে
হবে, আপনি যেই কাজ শিখেছেন সেই সকল কাজে
বিড করতে হবে,
যদি বিড করে কাজটি পেয়ে যান
তাহলে কাজটি করতে হবে এবং কাজের ফলাফল জমা দিতে হবে। অবশেষে ক্লাইন্ট কাজটি চেক করবেন এবং
আপনাকে পেমেন্ট করবেন। এবং আপনি
সেই পেমেন্টের টাকা আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তুলতে পারবেন